ইসরায়েলি ভূত এর বিকার ও বিকাশ:

ধরেন আপনি আমারে একটা থাপ্পড় মারলেন তবে থাপ্পড় খাওয়ার পর আমার মনে কোনো অভিমান, অভিযোগ বা আমার নানাবিধ কর্মকান্ড নিয়া নিজের ভেতর প্রশ্ন জাগলো না। কারণ আপনি আমাকে থাপ্পড়টা মেরেছেন অসচেতন চিন্তা এবং রাজনৈতিক কৌশল দিয়া। যা গণচিন্তা সম্মিলিত শক্তি নয়, অভ্যাসগত বিরোধীতা’র চর্চাই কেবল। যেমন শিখানো বুলি কাক’কে শেখানো যায় না, আবার ময়লা খাবার ময়না পাখি’কেও খাওয়ানো যায় না। বিরোধিতা করার মতো শক্তিশালী মতাদর্শকে নিজস্ব চিন্তাপ্রক্রিয়ায় ও আচার-আচরণে ধারণ করবার জন্য প্রথমত প্রয়োজন সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্ম সচেতনতা। রাষ্ট্রীয় আইন ও অধিকার সচেতনতা। অথচ এর কোনোটিতেই আমাদের দক্ষতা বিশেষ করে চিন্তার দক্ষতা ও স্বক্ষমতা নগন্য রকম।

যে পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে এখনো ক্রিমিনালিজমের চর্চা করা হয়, সেখানে গণতান্ত্রিক রাজনীতি ব্যপারটা তাবিজ বিক্রি করার উদ্দেশ্যে একটু বানর খেলা দেখানোর মতো। তবে রাষ্ট্রকে এস্টাবলিস্ট করার ক্ষেত্রে জনগণের চিন্তার ভিতরে বহিরাগতরাষ্ট্রের বিরোধিতা গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে নিজের রাষ্ট্র শক্তিশালী হয়ে উঠে তবে আজ অব্দি আমাদের সামাজিক নীতি ও ধর্মীয় নীতি রাষ্ট্রীয় নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক থাকায় জনগণ কোন নীতিতে তার মৌলিক অধিকার পূরণে সক্ষম সেই খোঁজ স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময় পর্যালোচনার ভিতর দিয়ে এখনো পাওয়া যায়নি। যখন রাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক সচেতনতা ও চিন্তা তৈরি করা হবে, তাতে প্রয়োজন হয়ে ওঠে একটি রাজনৈতিক দল বা এজেন্সি এবং সেই রাজনৈতিক দল বিশেষ বিশেষ কয়েকটি শ্রেণীকে নিয়ে রাষ্ট্রের সামনে পাশাপাশি জনগণের সামনে হাজির হয়।

পূর্বে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু শ্রেণীর ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি শ্রেণি ও জাতির মানুষকে ব্যবহার করা হয়েছে রাজনীতির অস্ত্র হিসেবে। তবে সেই সময় ও নেতৃত্বে স্বৈরাচারী কাঠামো ও মনোভাব’কে আমরা প্রশ্ন, জবাবদিহিতা ও কথা বলার শক্তি দিয়ে পরাজিত করতে পেরেছি নতুন সময় ও নেতৃত্বের প্রয়োজনে, যেখানে আমাদের লক্ষ্য অটুট ও স্বতঃস্ফূর্ত ছিলো নানানভাবে, বাট সেই লক্ষ্যের অস্তিত্ব দৃশ্যমান ছিলোনা, অনেকটা দিশেহারা হয়ে দ্বীপের তীরে ভিড়বার মতো। এক্ষেত্রে নতুন রাজনৈতিক চিন্তাশীলরা দিশেহারা চিন্তকদেরকেই একত্রে নতুন দিশার স্বপ্ন দেখায়। আমার দৃষ্টিতে নতুন চিন্তার রাষ্ট্রে রাজনৈতিক অস্ত্র বা রাজনীতি করার অস্ত্র হিসেবে যে শ্রেণীকে তৈরি করা হচ্ছে সেই শ্রেণী হচ্ছে তারা যারা নতুন ভাবে নিষ্পেষিত, নিপীড়িত ও ঐতিহাসিক ধর্মচেতনার ভিত্তির চেয়ে নিজস্ব সচেতনা নিয়ে সক্রিয় কিন্তু প্রতিক্রিয়াশীল নয়।

মাজার পন্থীদের নতুন রাজনৈতিক চিন্তার পরিমন্ডলে নতুন সংখ্যালঘু শ্রেণী হিসাবে হাজির করা হচ্ছে।

কারণ বাংলাদেশের জনগণের কাছ থেকে সার্বভৌম শক্তি বা উৎস কে ছিনিয়ে আনার সবচেয়ে সহজ কৌশল হচ্ছে ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি স্থাপন। যা একটি রাষ্ট্রীয় কৌশল সমাজ, ধর্ম ও রাজনীতির বিরুদ্ধে। তাই আগত নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নতুন এই সংখ্যালঘু শ্রেণীর উদ্ভব ঘটানোর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর মাঠের কার্যক্রম বা প্রতিশ্রুতিমূলক কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে না। জাস্ট ন্যারেটিভ কে কাজে লাগিয়ে জনগণের মাইন্ডসেট তৈরি করা হচ্ছে। একটা রাষ্ট্র নির্মাণ করতে গিয়ে, সমাজ, ধর্ম ও রাজনীতিকে জিম্মি করার নতুন ভয়াবহতা বিরূপভাবাপন্ন মানসিকতার জন্ম দিবে।

এক্ষেত্রে আমার ধারণা স্পষ্ট, বিরোধিতা মানে সম্মিলিত শক্তির সৃষ্টি, যা দেখার জন্য অপেক্ষা করছি বাংলাদেশের ক্ষেত্রে। তা এখনো ভারত বিরোধিতা দিয়া হইতেছে না, তাই আমাদের উচিত বিশ্বেপরিমন্ডলে সমস্ত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিরোধী মনোভাবের জাগরণী শক্তি অর্জন করা, তাইলে যেকোনো প্রকার বে-আইনি রাষ্ট্র এমনি ঠান্ডা, যে ঠান্ডাটা আমরা চাইলে ডান্ডা দিয়ে করতে পারি না, বা স্বক্ষম না। তাই গণচিন্তার সহযোগে সচেতনার সাথে বিরোধিতা, তা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হতে পারে, সমাজ ও প্রথাগতধর্মের বিরুদ্ধেও করা হতে পারে। যা বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্র গঠন কাঠামোতে গ্রহণযোগ্যতার আভাস দিয়ে আদতে নতুন নিপীড়িত অসহায় শ্রেণিকে আমাদের সাথে পরিচয় করাবে, কারণ আমাদের লড়তে হবে আধুনিক ইসরায়েলি ভূত দের সাথে।