খিলাফতকে আমি ইউটোপিয়া মনে করি, বর্তমান বাস্তবতায়।
শুধু বর্তমান না, খোলাফায়ে রাশেদীনের পরবর্তী সময়েই খিলাফত তার কার্যকারিতা হারিয়েছে! দেখা গেছে খিলাফত পর্যবসিত হয়েছে রাজতন্ত্রে, যেইটা ইসলাম অতীত শাসনেরই ধারাবাহিকতা।
আবার কার্যকারিতা ফিরে পাবে কিনা সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ।
খিলাফতের নিয়োগ পদ্ধতি কেমন হবে, এটা একটা জটিল বিষয়। তারপর খলিফার যে অসীম ক্ষমতা, তিনি যদি পথভ্রষ্ট হয়ে পড়েন তাহলে তার অপসারণ কীভাবে হবে এইটাও একটা প্রশ্ন! মানুষ, মানুষের পথভ্রষ্ট হওয়া স্বাভাবিক! আর আমরা দেখেছি খলিফা একবার হয়ে গেলে মৃত্যু পর্যন্ত থেকে যায়, এটাও রিস্কি! ফলত খিলাফত নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে ভাবাবেগের থেকে বেশি দরকার নির্মোহ আলোচনা।
আরো ব্যাপার আছে। নবীজীর আমলের একাট্টা ইসলাম আমাদের নেই। আমরা নানা ভাগে বিভক্ত! মতাদর্শিক সংঘর্ষে লিপ্ত এবং সহাবস্থান তো একেবারে নেই বললেই চলে। এইটা একটা মেজর পয়েন্ট!
ফলত খিলাফত প্রতিষ্ঠা করলে, কতটা ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হবে এর একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। যে গোষ্ঠী ক্ষমতা দখল করবে খিলাফতের নামে তাদের মতাদর্শের রাষ্ট্রীয় লেজিটিমেসি সমেত একনায়কতন্ত্র চলবে। সুন্নি গোষ্ঠী ক্ষমতা দখল করলে অপর হবে কওমি, কওমি ক্ষমতা দখল করলে অপর হবে সুন্নী, জামাত; জামাত ক্ষমতা দখল করলে হবে অন্যরা!
মানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানের থেকে বড় সংখ্যালঘু হয়ে উঠবে খোদ মুসলমানদের অন্য ফেরকার অনুসারীরা। কোনো একক ধর্মীয় মতাদর্শ যদি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পেয়ে তখন বিরোধী মতাদর্শের উপর কেমন নিপীড়ন চালায় খোদ বিগত খিলাফতেই এর নজির ভুরি ভুরি!
ফলত খিলাফত নিয়ে কালচারাল ওয়ার না করে এখন রাষ্ট্র সংস্কারের সুযোগে কীভাবে একটা ওয়েলফেয়ার রাষ্ট্র গঠন করা যায় এই ডিবেট বেশি জরুরি!