রিহ্যাবিলিটেশন: নাজিদের গনতন্ত্র? আওয়ামিলীগের বিলুপ্তি প্রয়োজন নাকি এই সমাধান পদ্ধতিগতভাবে সমস্যাজনক, যা দিয়ে বিএনপি জামাতকেও ঘায়েল করেছে খোদ হাসিনা?

রিহ্যাবিলিটেশন নাজিদের গনতন্ত্র
জুলাই বিপ্লব

আসুন, বুঝি।

প্রশ্নটা খুব স্পষ্ট, টেকসই ও জনমনে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে এমন সংশোধনের মাধ্যমে, আবারো আওয়ামিলীগকে গদিতে পাবো কিনা?

দেখেন, একটা সংঘাতময়, ফিজিক্যালি ভায়োলেন্ট প্রেমের সম্পর্ক থেকে মানুষ যখন মুক্তি পায়, তার কিন্তু সেই ট্রমার উপর বেশ লম্বা কিছু সময়, প্রখর মনযোগ দিতে হয়। খাদ্যাভ্যাস, এক্সারসাইজ, প্রোডাক্টিভিটি, মেডিটেশন এবং ঔষধপত্র ছাড়াও জীবনের ছোটছোট ডিটেইলসে আলাদা কেয়ার লাগে।

হাসিনার পতন আমার কাছে সেরকমেরই ঘটনা। বলাবাহুল্য, হাসিনা কাম শেখ পরিবার এবং আওয়ামিলীগের মধ্যে আমি তফাৎ খুঁজি না। আওয়ামিলীগের ইন্ডিভিজ্যুয়ালি কোনো সেন্স মেকিংয়ের, অর্ডার আনার বা ডিসিশন দেয়ার ক্ষমতায় আমরা দেখিনি।

শুরু থেকেই ইট ওয়াজ অল অ্যাবাউট দেয়ার প্রাইমমিনিস্টার, তাদের আপা, তাদের আম্মো। যেই বলয়ক্ষেত্রের বুলজ আইয়ে, অর্জুনের তীরও লক্ষ্যভ্রষ্ট।

সুতরাং, আমাদেরকে আওয়ামীর রিপ্রেজেন্ট নিয়ে ভাবতে হবে প্রশ্নের প্রথমেই৷ এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর টাইম আসেনি। কিভাবে আপনি পুনর্বাসন নিয়ে এত উচ্ছ্বাসিত? যেই নিকৃষ্ট দলের নাড়িনক্ষত্র, স্ট্রাকচার, প্ল্যান বা দুর্নীতির হিশাব আপনার জেহেনে টিল নাউ, অনুপস্থিত?

ইউ হ্যাভ নো আইডিয়া হাউ মাচ ড্যামেজ শি ডিড টু ইউ। আপনি ওয়াকিবহাল নন। মাত্রই বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নীলনকশাগুলো খবরে আসছে! রানা প্লাজা ও তাজরিন গার্মেন্টসে জীবিত মানুষসুদ্ধ ধসিয়ে ফেলার নির্দেশ দিতে পারে যাদের নেত্রী, সেই দলের কামব্যাক কিভাবে হবে, আমি তা আরেকটু ভাবতে চাই৷

আমাকে বুঝতে হবে, কিধরনের প্রপোজিশনে তারা আসতে পারে? ফ্রিডম অব স্পিচ? ভোটের অধিকার? আরো ন্যারোড থিকিংয়ে বললে, গুম থেকে নিরাপত্তা? তথ্যপ্রাপ্তির এসুরেন্স? সত্য বলা? আইন বানিয়ে নিজ পরিবারের গুন্ডামীকে প্রোটেকশন না দেয়া?

আপনার খুব বেশি অর্জনের দরকার লাগে না কিন্তু জীবনে বাঁচতে, কোনো চিন্তার স্ফুরণ তখনই সম্ভব যদি এতে ভালোত্ব, মোরালিটি এবং কোড অফ লাইফের সন্ধান পাওয়া যায়৷

আওয়ামিলীগ সিম্পলি যাযাবরের দল, আপনি গত পনেরো বছরে একটু স্পষ্টভাবে তাকালেই রিলেইট করতে পারবেন। এই দলের শামিয়ানায় মানুষ সংঘবদ্ধ থাকতো শুধুমাত্র একটা সেন্টিমেন্টে, — সেটা নিরঙ্কুশ স্বার্থসিদ্ধির। কোন টেন্ডার খুঁচিয়ে পাঁচ সাতকোটি টাকার কমিশন খাওয়া সম্ভব, কোন প্রোজেক্ট হাতালে দশ পনেরো কোটি টাকা সাইডে নেয়া যাবে— মোদ্দাকথা, ধুরন্দর, অলস, চতুর, অসৎ এবং সুযোগসন্ধানী লোকের ঝুণ্ডও বলতে পারেন এই গনহত্যাকারীর দলকে।

রিহ্যাবিলিটেশন নাজিদের গনতন্ত্র
জন্মভুমি অথবা মৃত্যু

আমার বিশেষণগুলো কানে বাজলেও খুব কনফিডেন্সের সাথে আমি এর ভাউচার দিতে পারবো। যেকোনো বাজেট তুলে দেখুন! এনিওয়ান!

কোনো সচিব, আমলা বা ব্যুরোক্র্যাট, বুকে হাত রেখে কারু বলার সাহস নাই যে সে চোর নয়। জনগণের টাকা মারে নাই।

ফলে, আমি বলবো আওয়ামিলীগের পুনর্জীবন প্রাপ্তির চেয়ে এই মুহূর্তে, সবচে গুরুত্বপূর্ণ— আইনগুলোর খোলাখুলি সংস্করণ৷ আমাদের দুর্ভাগ্য যে, এত বড় অভ্যুত্থানের পরেও সেই জবড়জং, হাসিনার মনগড়া সংবিধানের সংস্পর্শেই জাতিকে নতুন নেতৃত্ব পেতে হয়েছে। ইট ওয়াজ আ শেইম। কেন এই ভুয়া, পুতুলরাষ্ট্রপতি এখনো চেয়ারচ্যুত হলো না— দ্যাট মাইট বি আ গুড কোশ্চেন।

এছাড়া, এরকম একটি গনহত্যাকারী দলের ছায়াতলে এখনো মানুষ থাকতে চায় কেন, সেটাও গবেষণার বিষয়। আওয়ামিলীগের ক্ষমতায় ফেরার আলাপটুকু এ পর্যন্ত নাজুক। বাংলাদেশ অবশ্যই বিরল এক জায়গা, এখানে আমরা এতো পলিটিক্যালি কারেক্ট হতে চাই! যেখানে সরাসরি গুলির নির্দেশে খুন হওয়া শহীদের প্রকৃত সংখ্যাও মিলেনি— অথচ হত্যার নির্দেশদাতা ও জড়িতদের উপযুক্ত বিচারের আগেই, এদেশে তারা রাজনীতির অভয়ারণ্য পাবে কিনা, সেটা নিয়ে আমরা উচ্চকিত!